“গাঁজার নীতিমালা — কি সম্ভব, কিভাবে?”
সিরিজ: অন্ধকারে আলোর খোঁজ (পর্ব ৫)
লেখা: Sick Monsters টিম
প্রশ্ন একটাই—গাঁজা যদি দেশে থাকেই, তাহলে এর জন্য নীতিমালা থাকবে না কেন?
প্রতি মাসে কোটি কোটি টাকার গাঁজা সীমান্ত পেরিয়ে ঢুকছে,
হাজার হাজার তরুণ সেবন করছে—
কারো পকেট ভারী হচ্ছে, কিন্তু রাষ্ট্র কিছুই পাচ্ছে না।
এটা কি নৈতিকতা? না রাষ্ট্রের ব্যর্থতা?
গাঁজার বাস্তবতা: বাংলাদেশ বনাম দুনিয়া
- বাংলাদেশে গাঁজা অবৈধ, কিন্তু ব্যবহার রোধ হয়নি।
- কানাডা, থাইল্যান্ড, জার্মানি, উরুগুয়ে—
এই দেশগুলোতে নিয়ন্ত্রিত বৈধতা আনা হয়েছে।
সরকার রাজস্ব পায়, আর মাদক চক্র দুর্বল হয়।
একটি গবেষণা মতে,
“গাঁজা নিষিদ্ধ থাকলেও এর সহজলভ্যতা ৯০% এলাকায় বিদ্যমান।”
নীতি না থাকলে কী হয়?
- গাঁজা অবৈধ থাকায় সরকার ট্যাক্স পায় না, কিন্তু চক্র লাখ লাখ টাকা কামায়।
- তরুণেরা ভেজাল বা রাসায়নিক মিশ্রিত গাঁজা সেবন করে — যা আরো ভয়ংকর।
- চিকিৎসা বা রিহ্যাব সাপোর্ট থাকে না, কারণ নীতিমালা না থাকলে কেউ খোলাখুলি সাহায্যও চায় না।
সম্ভব নীতিমালার রূপরেখা (খসড়া ধারনা)
১. নিয়ন্ত্রিত লাইসেন্স: নির্দিষ্ট প্রতিষ্ঠান ও মেডিকেল প্রতিষ্ঠানে গাঁজার চাষ ও বণ্টনের লাইসেন্স প্রদান।
২. চিকিৎসা ভিত্তিক ব্যবহার: মানসিক চাপ, ব্যথা নিয়ন্ত্রণে গাঁজার মেডিকেল ব্যবহারের অনুমতি।
৩. বয়স ভিত্তিক নিয়ন্ত্রণ: ২১ বছরের নিচে কেউ সেবন বা ক্রয় করতে পারবে না।
৪. ট্যাক্স ব্যবস্থা: সরকার নির্দিষ্ট হারে ট্যাক্স আদায় করবে ও এই অর্থ মাদক নিরাময়, শিক্ষা ও পুনর্বাসনে ব্যবহার হবে।
৫. জনসচেতনতা ও ট্র্যাকিং: প্রতিটি বিক্রয় ট্র্যাকিং এর আওতায় থাকবে, যাতে অপব্যবহার ঠেকানো যায়।
তবে ঝুঁকি কোথায়?
- অতি উদারতা হলে সেবন বাড়বে
- অপরাধী চক্র নীতিমালাকে ব্যবহার করে বৈধতা পেতে পারে
- ধর্মীয় ও সামাজিক প্রতিবন্ধকতা থাকবে
তাই নীতিমালা চাইলে দৃঢ় মনোভাব ও স্বচ্ছ কার্যপ্রণালী দরকার।
Sick Monsters বলছে, “বিচার নয়—নির্মাণ করো”
এই দেশেও কি সম্ভব গাঁজার নিয়ন্ত্রিত বৈধতা?
হয়তো সম্ভব, যদি—
“নৈতিকতা আর সাহস একসাথে উঠে আসে নীতিনির্ধারকদের টেবিলে।”
[সিরিজ পর্ব ৬ আসছে: “গাঁজা-ইন্ডাস্ট্রি: কারা চালায়, কিভাবে চলে?”]