গাঁজা, গলি আর গোপন মুনাফা: এক অঘোষিত বাংলাদেশ
লেখা: Sick Monsters টিম
আমি এখন এমন একটি জায়গায় আছি — বাংলাদেশেই — যেখানে দিন-রাত ২৪ ঘণ্টা গাঁজার গন্ধ ঘুরে বেড়ায়। আমার রুমমেটরা মাঝেমধ্যেই রুমের ভেতর গাঁজা সেবন করে। কিন্তু মজার ব্যাপার হলো, ওরা খুব ভালো মানুষ — আন্তরিক, সহানুভূতিশীল। আমি তাদের সঙ্গে কথা বলেছি, তারা সমাজ থেকে পালিয়ে আসা কেউ না, বরং সমাজেই আছে। তাদের গাঁজার অভ্যাস একটা “অভ্যাস” হয়ে গেছে।
কিন্তু প্রশ্ন জাগে — সরকার তাদের ব্যাপারে কিছু বলে না কেন?
আরও বড় প্রশ্ন — এই গাঁজার পেছনের অদৃশ্য অর্থ কোথায় যায়?
বাংলাদেশে গাঁজা: আইনের চোখে, বাস্তবতার পেছনে
বাংলাদেশে গাঁজা অবৈধ। কিন্তু তার ব্যবহার একদম থেমে নেই। বরং নির্দিষ্ট অঞ্চল, নির্দিষ্ট শ্রেণি, বা গোষ্ঠীর মাঝে এটা প্রাত্যহিক অভ্যাস হয়ে গেছে। আইন আছে, কিন্তু প্রয়োগ নেই। প্রয়োগ আছে, কিন্তু তা নির্বাচনমুখী।
তাহলে কারা লাভবান হয়?
- গাঁজার মতো মাদকের অবৈধ ব্যবসা থেকে প্রতি মাসে লক্ষ লক্ষ টাকা যায় কিছু মুনাফালোভী কর্মকর্তার পকেটে।
- তারা আইন প্রয়োগের নামে নীরব থেকে মুনাফা তোলে, আর সাধারণ মানুষ দিক হারায়।
নীতি থাকা দরকার, কিন্তু কার স্বার্থে নীতি বন্ধ?
আমরা যখন দেখি বিদেশে (যেমন কানাডা, থাইল্যান্ড) গাঁজাকে বৈধ করে নিয়ন্ত্রিত বিক্রয়ব্যবস্থা চালু হয়েছে, তখন প্রশ্ন জাগে — বাংলাদেশে সেটা কেন সম্ভব নয়?
উত্তরটা কঠিন নয়:
- যারা এখন অবৈধ পথে কোটি কোটি টাকা কামাচ্ছে, তারা কখনোই চাইবে না এটা বৈধ ও স্বচ্ছ পদ্ধতিতে নিয়ন্ত্রিত হোক।
- গাঁজা বৈধ হলে তারা আর পুলিশ বা রাজনীতিকে কিনে রাখতে পারবে না। তাদের লাভ বন্ধ হয়ে যাবে।
আমরা কোন দিক থেকে দেখব?
আমরা গাঁজাকে একদিকে দেখি অপরাধ হিসেবে।
আবার অন্যদিকে, এটা অনেকের জন্য হয়ে উঠেছে মানসিক ভার লাঘবের একমাত্র পথ।
তবে সত্য কথা হলো, গাঁজা কখনোই স্থায়ী সমাধান নয়। এটি কেবল অস্থায়ী প্রশান্তি, যার পেছনে লুকিয়ে থাকে আসক্তি, স্বাস্থ্যঝুঁকি, এবং সামাজিক বিচ্ছিন্নতা।
Sick Monsters বলছে: সময় এসেছে খোলামেলা কথার
আমরা চাই—
- গাঁজার বিষয়ে খোলাখুলি সামাজিক আলোচনা হোক।
- সরকার নীতিগত দৃষ্টিভঙ্গি তৈরি করুক।
- এবং সবচেয়ে বড় কথা, যারা গাঁজার মধ্যে বন্দী হয়ে আছে, তারা যেন বের হয়ে আসতে পারে — বিকল্প খুঁজে পায়, সহানুভূতি পায়।
এই লেখার উদ্দেশ্য কাউকে দোষ দেওয়া নয়। বরং, আমাদের সমাজের সেই চেহারাটা তুলে ধরা যেটা অনেকেই দেখেও চুপ থাকে।
আমরা Sick Monsters প্ল্যাটফর্মে কথা বলি সেই সব “অস্বস্তিকর সত্য” নিয়ে, যেগুলো চুপ করে থাকলেই সমাজ নষ্ট হয়।