সীমান্তের ছায়া-রাস্তায়: গাঁজার চোরাচালান নেটওয়ার্কের গোপন সাম্রাজ্য

সীমান্তের ছায়া-রাস্তায়: গাঁজার চোরাচালান নেটওয়ার্কের গোপন সাম্রাজ্য

লেখা: Sick Monsters টিম
সিরিজ: অন্ধকারে আলোর খোঁজ (পর্ব ২)


সীমান্তে অস্ত্র নেই, কিন্তু চলে যুদ্ধ। গুলির শব্দ নেই, তবু প্রতিদিন মরছে ভবিষ্যৎ।

এই যুদ্ধ গাঁজার, আর বিজয়ী সেইসব মানুষ যারা “চোরাকারবারি” নয় — তারা হলো সিস্টেমের “অন্ধকার খেলোয়াড়”।
এরা কখনো সাংবাদিকের ক্যামেরায় আসে না।
কিন্তু প্রতিদিন কোটি কোটি টাকার গাঁজা ঢুকছে এদের “নেতৃত্বে”।


গাঁজার মূল উৎস: বাইরে যতটা দূর, ভেতরে ততটাই কাছের

ত্রিপুরা, মেঘালয়, মিয়ানমার — এসব অঞ্চল শুধু পাহাড়ে ঘেরা না,
ঘেরা এক ধরনের “গ্রে জোন”-এ, যেখানে আইন ঢোকে না, নেশা বের হয়।

চাষ হয় একর একর জমিতে। তারপর শুরু হয় “চোরাপথ” —
ছোট নদী, ধানক্ষেত, বাঁশবন, নৌকা, মাটির রাস্তা হয়ে ঢোকে বাংলাদেশে।

একটি গাঁজার চালান কখনো এক জায়গায় নামে না —
বিভিন্ন পয়েন্টে ভাগ হয়ে ঢোকে, যেন ধরাও না পড়ে, থামানোও না যায়।


কাজটা কারা করে? ৫ স্তরের সিন্ডিকেট

১. লোকাল সংগ্রাহক: সীমান্তের গরিব আদিবাসী বা বেকার যুবক
২. পরিবহনকারি: মোটরসাইকেল, সিএনজি বা গরুর গাড়িতে চালান বহনকারী
3. তথ্যদাতা: সীমান্তের চায়ের দোকান থেকে শুরু করে থানার ‘দালাল’
৪. ব্যবস্থাপক: ঢাকায় বসে বা ফেসবুকে চালান নিয়ন্ত্রণ করা লোক
৫. ছায়া-পৃষ্ঠপোষক: কিছু রাজনৈতিক, প্রশাসনিক ও প্রভাবশালী ব্যক্তি

এই সিন্ডিকেটে সবার ‘ভাগ’ ফিক্সড।

একটা ২০০ কেজির চালানে অন্তত ১৫–২০ জন লোক প্রতিবার টাকা পায়


চোরাচালান শুধু কষ্টের কাজ নয়, এটা এখন পেশা

একজন সীমান্তবাসী বলেন:

“১০০০ টাকার জন্য শ্রমিক হয়ে কি করব?
একবার মাল দিলেই ২০ হাজার।”

এই টাকাই তাদের শেখায় আইনের ভয় নেই, আছে প্রভাবের আশ্বাস।

তারা জানে কারা “ফোন দিলে” পুলিশ ধরা ছেড়ে দেবে।
তারা জানে কারা “ঘুষ না দিলে” মাল পুড়িয়ে ফেলবে।


বিজিবি-পুলিশ-পলিটিক্স: কার মুখে বলব ‘দায়িত্ব’?

প্রতিটি সীমান্তে যখন চোরাচালান হয়, তখন পেছনে থাকে চোখ বুজে থাকা চোখ
কেউ বলে, “মাঠ পর্যায়ে লোকবল কম”, কেউ বলে “সিন্ডিকেট ধরতে গেলে চাপ আসে উপর থেকে।”

সত্যি কথা হলো — এই চাপটা টাকা দিয়ে তৈরি, আর চাপা পড়ে যায় সত্য।


Sick Monsters বলছে: এই খেলা থামাতে হলে খেলার মাঠেই আলো দিতে হবে

চোরাচালান বন্ধ করতে হবে,
তবে গরিব লোকদের মারধর করে নয়,
বরং সেই অন্ধকার অফিসঘরের দরজা খুলে।

গাঁজার বৈধতা নিয়ে তর্ক থাকতেই পারে —
কিন্তু এই অবৈধ অথচ প্রকাশ্য ব্যবসা আর কতদিন চলবে?


**আমরা জেনেছি গাঁজা কোথা থেকে আসে।

পরবর্তী পর্বে জানব, কারা সেবন করে — আর কীভাবে তারা হারায় নিজেরাই নিজেকে।**


**আপনার এলাকাতেও কি এমন কিছু ঘটে?

কমেন্ট করুন বা Sick Monsters-কে ইনবক্স করুন — অন্ধকার যদি দেখেন, আলোর জন্য ডাক দিন।**


[সিরিজ পর্ব ৩: “গাঁজায় পোড়া জীবন” — ৩ জনের বাস্তব কাহিনি (শিগগিরই প্রকাশিত)]

Share the Post:

Related Posts

গাঁজার চোরাচালান নেটওয়ার্কের গোপন সাম্রাজ্য

সীমান্তের ছায়া-রাস্তায়: গাঁজার চোরাচালান নেটওয়ার্কের গোপন সাম্রাজ্যনির্বাহী সারসংক্ষেপএই প্রতিবেদন বাংলাদেশে গাঁজা চোরাচালান নেটওয়ার্কের ব্যাপকতা এবং এর জটিল প্রকৃতি উন্মোচন করেছে।

Read More

কোডিং জানলেই কি ভবিষ্যৎ সুরক্ষিত? নাকি অন্য স্কিলও লাগবে?

“ভাই, কোডিং শিখলেই তো লাইফ সেট!” এই লাইনটা এখন টিনএজার থেকে বিশ্ববিদ্যালয় পড়ুয়া, এমনকি অনেক পেশাজীবীর মুখে মুখে। ইউটিউবে সার্চ

Read More

রেজিস্ট্রেশন করুন, অন্যথায় কি সেবা ব্যবহার করতে ব্যর্থ হবেন